এই ৭টি খাদ্য মৌসুমি অ্যালার্জি উপসর্গ কমাতে সাহায্য করতে পারে
যখন আপনি খাদ্য এবং অ্যালার্জির কথা ভাবেন, তখন আপনি হয়তো কিছু খাদ্য আপনার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কথা চিন্তা করেন যাতে কোন নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া না হয়। কিন্তু মৌসুমি অ্যালার্জি এবং খাদ্যের মধ্যে সম্পর্ক কয়েকটি খাদ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ, যেগুলি ক্রস-রিয়াকটিভ খাদ্য হিসেবে পরিচিত। ক্রস-রিয়াকটিভ খাদ্যের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে যাঁদের কাছে বীরচ, রাগউইড, বা মাগওয়ার্ট মৌসুমি অ্যালার্জি রয়েছে।
মৌসুমি অ্যালার্জি, যা হে ফিভার বা অ্যালার্জিক রাইনাইটিস নামেও পরিচিত, সাধারণত বছরে কিছু নির্দিষ্ট সময়ে ঘটে — যা সাধারণত বসন্ত বা গ্রীষ্মকাল। এটি ঘটবে যখন ইমিউন সিস্টেম অ্যালার্জেনের প্রতি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখায়, যেমন গাছের পোলেন, যার ফলে অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয় যেমন নাক বন্ধ হয়ে আসা, হাঁচি এবং চুলকানি।
সাধারণত চিকিৎসা এন্টারাইটিক ওষুধ নিয়ে হয়, তবে জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন মৌসুমি অ্যালার্জির উপসর্গ হ্রাস করতেও সাহায্য করতে পারে। নির্দিষ্ট কিছু খাদ্য আপনার খাদ্যতালিকায় যোগ করলে, নাকের জল আর চোখের চুলকানি কমাতে পারে। প্রদাহ কমানো থেকে শুরু করে ইমিউন সিস্টেম বাড়ানো পর্যন্ত, মৌসুমি অ্যালার্জির কষ্ট কমাতে কিছু খাদ্য সম্ভাব্যভাবে সহায়ক হতে পারে। এখানে কিছু খাদ্যের তালিকা:
১. আদা
অ্যালার্জির অনেক অস্বস্তিকর উপসর্গ প্রদাহজনিত সমস্যার কারণে ঘটে, যেমন নাসিকা, চোখ ও গলা ফুলে যাওয়া এবং জ্বালা। আদা এই উপসর্গগুলো প্রাকৃতিকভাবে কমাতে সাহায্য করতে পারে। হাজার হাজার বছর ধরে, আদা নানা স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য একটি প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেটিভ, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ফাইটোকেমিক্যাল উপাদানগুলি ধারণ করে। ২০১৬ সালের একটি প্রাণী গবেষণায় দেখা গেছে যে আদা কারো রক্তের প্রো-ইনফ্ল্যামেটরি প্রোটিনের উৎপাদন কমিয়ে দিয়ে অ্যালার্জির উপসর্গ কমিয়েছে। আপনি আদার তাজা অথবা শুকনো দুই রকমই ব্যবহার করতে পারেন।
২. মৌমাছির পোলেন
মৌমাছির পোলেন শুধু মৌমাছির খাদ্য নয় — এটি মানুষের জন্যও স্বাস্থ্যকর! এটি এনজাইম, নেকটার, মধু, ফুলের পোলেন এবং মোমের মিশ্রণ। গবেষণায় দেখা গেছে মৌমাছির পোলেন শরীরে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণ রয়েছে। স্থানীয় মৌমাছির পোলেন খাওয়ার কারণে শরীরের ওই পোলেনের প্রতি সহনশীলতা তৈরি হতে পারে বলে কিছু প্রমাণ রয়েছে।
৩. সাইট্রাস ফল
ভিটামিন সি সাধারণ সর্দির জন্য প্রতিরোধক হিসেবে পরিচিত নয়, তবে এটি অ্যালার্জি আক্রান্তদের জন্য সুবিধা দিতে পারে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাদ্য খেলে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস কমে আসার প্রমাণ রয়েছে। তাই মৌসুমি অ্যালার্জির সময়, কমলা, লেবু, এবং লেবু জাতীয় সাইট্রাস ফল খেতে পারেন।
৪. হলুদ
হলুদ একটি অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরী শক্তিশালী উপাদান হিসেবে পরিচিত। এর সক্রিয় উপাদান কুরকিউমিন অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের কারণে হওয়া ফুলে যাওয়া ও জ্বালাভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। আপনি হলুদকে খাবারে ব্যবহার করতে পারেন অথবা পিল বা টিঙ্কচার হিসাবে গ্রহণ করতে পারেন।
৫. টমেটো
টমেটো ভিটামিন সি এর একটি আশ্চর্যজনক উৎস। একটি মাঝারি আকারের টমেটো আপনার দৈনিক ভিটামিন সি এর প্রয়োজনীয়তার প্রায় ২৬% প্রদান করে। টমেটোতে থাকা লাইকোপেন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানটিও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। রান্না করা টমেটো সাধারণত শরীরে সহজেই শোষিত হয়।
৬. সালমন ও অন্যান্য তেলযুক্ত মাছ
উমেগা-৩ ফ্যাট অ্যাসিডগুলো অ্যালার্জির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এবং আশ্মা নিরাময়ে সহায়ক হতে পারে। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৮ আউন্স তেলযুক্ত মাছ খাওয়া সুপারিশ করা হয়, বিশেষ করে সালমন এবং ম্যাকারেল।
৭. পেঁয়াজ
পেঁয়াজ হচ্ছে কুইসারটিনের একটি চমৎকার উৎস, যা মৌসুমি অ্যালার্জির উপসর্গ কমাতে সাহায্য করতে পারে। কাঁচা লাল পেঁয়াজের মধ্যে কুইসারটিনের উচ্চ ঘনত্ব থাকে। আচার বা স্যালাডে পেঁয়াজ ব্যবহার করতে পারেন।
সর্বশেষ কথা
বসন্তকালের ফুল ও ফসল একটি সুন্দর দৃশ্য। এই খাদ্যগুলো মৌসুমি অ্যালার্জির চিকিৎসার জন্য নয়, কিন্তু এগুলো আপনার সামগ্রিক জীবনযাত্রার একটি অংশ হিসেবে সহায়তা করতে পারে। উপরোক্ত খাদ্যগুলো যুক্ত করলে প্রদাহ কমাতে এবং এলার্জির প্রতিক্রিয়া হ্রাস করতে সহায়ক হতে পারে।